উচ্চ করারোপ প্রযুক্তিখাতকে পিছিয়ে দিচ্ছে

উচ্চ করারোপ প্রযুক্তিখাতকে পিছিয়ে দিচ্ছে

 

উচ্চ করারোপ প্রযুক্তিখাতকে পিছিয়ে দিচ্ছে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউশন (পিআরআই) জানিয়েছে বিশ্বের ১২৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি কর আদায় হচ্ছে স্মার্টফোন-কম্পিউটারসহ সব ধরনের ডিজিটাল পণ্যে উপর। ‘বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তিতে শক্তিশালী বিপ্লব’ বা ‘স্ট্রেংদেনিং দ্য আইসিটি রেভ্যুলুশন ইন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান ড. সাদিক আহমেদ বুধবার রাজধানীর গুলশানের হোটেল আমারীতে আয়োজিত সেমিনারে এই তথ্য জানান ।

 

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।ড. সাদিক আহম্মেদ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন । সাদিক আহম্মেদ একটি জরিপের কথা উল্লেখ করে  বলেন, আইসিটি খাতে বাংলাদেশ করারোপের দিক থেকে ১২৫টি দেশের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে। চীনের তুলনায় বাংলাদেশে ৫৫ শতাংশ বেশি করারোপ করা হয়। তিনি বলেন, তুরস্ক অন্যান্য দেশের মধ্যে ৫ থেকে ২০ শতাংশ করারোপ করে থাকে । কিন্তু বাংলাদেশে করারোপ পরিমাণটা আরও অনেক বেশি। তিনি আরও বলেন, এখনই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত সেবার মান বাড়াতে হলে।

সাদিক আহমেদ ইন্টারনেট প্রসঙ্গে বলেন, মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৯০ শতাংশই । কিন্তু ইন্টারনেটের দাম অনেক বেশি এই মাধ্যমে। তিনি ব্যান্ডউইথ ইন্টারনেট প্রসঙ্গে বলেন, ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৪ সালে , ২০০৫ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মাত্র ১ শতাংশ বাংলাদেশে ব্যান্ডউইথ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে । কিন্তু তা ৬ দশমিক ১ শতাংশ হওয়ার কথা ছিলো উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ।

পিআরআইর ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, কম্পিউটার-স্মার্টফোনসহ ডিজিটাল পণ্যের কররোপ, বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাত দ্রুত এগিয়ে যাবে ইন্টারনেট ও ব্যান্ডউইথের দাম কমালে । তিনি বলেন এ খাতে বাংলাদেশ ভালোভাবে এগুচ্ছে, ২০১৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিট দ্বারা প্রস্ততকৃত বিশ্বের ১৬৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৫তম আইসিটি ইনডেক্সের র‌্যাংকিং অনুযায়ী ।

তবে পিআরআই থেকে এসব পণ্যে কর বেশি বলা হলেও প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর বলছেন অন্য কথা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, কর একটা ঝামেলাযুক্ত বিষয়। এসব পণ্য সংশ্লিষ্ট মালিক এমনকি এনবিআরের অনেক সদস্যরাও বোঝেন না এখানে অনেক বিষয় আছে সেগুলো। তাই কর সম্পর্কে তেমন অভিযোগ আসে না এসব পণ্যের । তবে দেশের আইসিটি ভিশন ও উন্নয়ন-২০২১ বাস্তবায়নে আইসিটি খাতকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কররোপ কমানোর বিষয়ে আলোচনা হবে যুক্তিযুক্ত হলে ।

জিএসএম প্রযুক্তিভিত্তিক মোবাইল অপারেটরদের আন্তর্জাতিক সংগঠন জিএসএমএ-এর হেনরি পার্কার সেমিনারে ‘মোবাইল ফোন খাতের কররোপ’ নিয়ে দ্বিতীয় গবেষণা প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন ।‘টেলিযোগাযোগ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ কর দিলেও তাদের ওপর অতিরিক্ত কর চাপানো হচ্ছে’ বলেন পিআরআই নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি আরও বলেন, সাধারণ তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের পার্থক্য ও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের প্রতিষ্ঠানের কোম্পানি কররোপ অনেক বেশি। এ জন্য অন্য টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে আসতে চাচ্ছে না। সেমিনারে আরও জানানো হয়, ইন্টারনেটের ও দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহার বাড়ছে। ২০০৫ সালে ইন্টারনেট ব্যবহার করতো শতকরা দশমিক ২৪ শতাংশ মানুষ । ২০১৩ সালে এসে দাঁড়িয়েছে এর ব্যবহার পাঁচ দশমিক ৭৫ শতাংশে ।

Related posts

Leave a Comment