রেস্টুরেন্ট ইন্টেরিয়র ডিজাইনঃ রঙিন সাজে সাজুক রেস্টুরেন্ট

রেস্টুরেন্ট ে রেস্ট নিতে নয়, খেতে যায় মানুষ। সেখানে ভালো খাবার যেমন প্রত্যাশিত, তেমনই প্রয়োজন ভালো পরিবেশ আর সুন্দর আয়োজন। কেননা, আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী। রেস্টুরেন্ট ে ঢুকেই যদি ভালো না লাগে, তবে সুস্বাদু খাবারেও তৃপ্তি পাওয়া যায় না। তাই, খাবারের পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট ের অভ্যন্তরীণ সজ্জার দিকেও নজর দেওয়া উচিৎ। ভালো অভ্যন্তরীণ সজ্জার একটি রেস্টুরেন্ট খাবারে তৃপ্তির পাশাপাশি মনেও প্রশান্তি আনে।

রাজধানীর সব এলাকাতেই রয়েছে ছোট-বড় অনেক রেস্টুরেন্ট । এসবে পাওয়া যায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন স্বাদের খাবার। ভালো মেনু আর সুন্দর ইন্টেরিয়র ডিজাইন সমৃদ্ধ বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট আছে রাজধানীতে। ভোজনরসিকদের ঠিকানা এসব খাবারের দোকান।

রেস্টুরেন্ট ের ইন্টেরিয়র ডিজাইন নিয়ে কথা হলো ইন্টোরিয়র লবি-এর মূল ডিজাইনার মো. আফজাল হক রতনে সঙ্গে। তিনি জানালেন, রেস্টুরেন্ট ডিজাইন করার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে তা হল বাইরের সৌন্দর্য। এটা দেখে একজন ক্রেতা বাইরে থেকেই বুঝতে পারেন এটা কি মানের রেস্টুরেন্ট আর খাবারের দাম কেমন হতে পারে। ভেতরের সাজসজ্জার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। খারাপ ডিজাইনের কারণে বসার জায়গাটা যদি আরামদায়ক না হয়, তাহলে খেয়েও তৃপ্তি মিলবে না।

তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন,‘কেউ যদি দেশীয় খাবারের ব্যবসা করেন, তাহলে ভেতরে সজ্জা হওয়া উচিত দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। যেমন, গ্রামীণ আবহ সৃষ্টি করে, এমন আসবাবপত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। বাঁশ ও বেত দিয়ে হতে পারে চমৎকার সব আসবাব।’

দেশি রেস্টুরেন্ট : দেশি রেস্টুরেন্ট তৈরিতে ব্যবহার কার যেতে পারে দেশীয় উপাদান যেমন: বাঁশ, পোড়া কাঠের টুকরো কিংবা টেরাকোটা ও পোটারি। রেস্টুরেন্ট ের ক্রেতারা যে পথে দিয়ে আসবে তার ওয়ালগুলোতে থাকতে পারে তৈলচিত্র। কিছু সেলফে দেওয়া যেতে পারে কিছু দেশীয় শোপিস। হারিকেন ঝুলানো থাকতে পারে একটা জায়গায়। কিছু গাছের ছালের প্যাটার্ন থাকতে পারে। ঝুলন্ত টবে থাকেতে পারে দেশীয় ফুল ও পাতাবাহারের গাছ। রেস্টুরেন্ট ের সিলিং-এ কিছু অংশ থাকতে পারে তাল পাতা কিংবা ছনের ছাউনি।

বিদেশি রেস্টুরেন্ট : বিদেশি রেস্টুরেন্ট ের ইন্টেরিয়র ডিজাইনে একটু বেশি খরচ। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন একটু দামি লুক দেওয়া। যে দেশি খাবার পরিবেশন করা হয়, সে দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই উপকরণ ব্যবহার করা যেতে পারে।

বাইরের সৌন্দর্য : রেস্টুরেন্ট ের বাইরের সৌন্দর্য দেখেই কিন্তু বোঝা যাবে এটা কোন ধরনের খাবারের জন্য। এটা দেশীয় খাবারের নাকি বিদেশি খাবারের। বাইরের দিকে থাকতে পারে একটি সাইনবোর্ড, যার ভেতরে কিছু লাইট এ বৈশিষ্ট্যের ব্যানারটিকে উপস্থাপন করবে।

রিসিপশন : রেস্টুরেন্ট ের রিসিপশনে থাকতে পারে একটা উঁচু রিসিপশন ডেষ্ক। একজন ব্যক্তি প্রথমে ঢুকেই খুঁজতে পারে প্রোগামের স্টেজ, খাবারের মূল জায়গা। রিসিপশন টেবিলটা হতে হতে পারে সুন্দর ডিজাইনের। রিসিপশন টেবিলের পেছনে থাকতে পারে রেস্টুরেন্ট ের নাম এবং লোগো। এখানে একটু আলোকসজ্জা ব্যবহার করা যেতে পারে।

খাবারের টেবিল : খাবারের টেবিলে করা যেতে পারে নান্দনিক কাজ। দুজন বসার জন্য কিংবা কয়েকজন একসঙ্গে বসার জন্য থাকতে পারে নানা ধরনের ডিজাইনের টেবিল। বাঁকানো গাছের গুড়ির উপর কাঁচের টুকরা বসিয়ে বানানো যেতে পারে খাবার টেবিল। একটু নিচু কিন্তু আরামদায়ক চেয়ার থাকবে পর্যাপ্ত।

ফাস্ট ফুডের জন্য রেস্টুরেন্ট : শুধু ফাস্ট ফুডের জন্য অনেকে রেস্টুরেন্ট করে। সেই ক্ষেত্রে ইন্টেরিয়র ডিজাইনের খরচ তুলনামূলক কম হয়। এই রেস্টুরেন্ট ে ব্যবহৃত শোকেসগুলোতে সাদা গ্লাস ব্যবহার করা যেতে পারে। থাকতে পারে সেলফ কেবিনেট, যাতে করে খাবারগুলো সহজেই প্রেজেন্ট করা যায়।

মিউজিক সিস্টেম : যেকোনো ধরনের রেস্টুরেন্ট ের জন্যই একান্ত প্রয়োজন সাউন্ড সিস্টেম। জন্মদিন কিংবা অন্য কোনো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রয়োজন ঘোষণা দেওয়ার প্রয়োজন হয়, এ জন্য সাউন্ড সিস্টেম দরকার। তা ছাড়া সব সময় শ্রতিমধুর হালকা মিউজিক পরিবেশকে করতে পারে আনন্দঘন। কোনো একটা জায়গার বসানো যেতে পারে এলসিডি টিভি।

ঢাকার কিছু রেস্টুরেন্ট : ব্যাটন রুজ, টপকাপি, ভিলেজ, এল টরো, অ্যাট্রিয়াম, জিওভান্নি রেষ্টুরেন্ট, গুলশান। তার্কিশ কাবাব অ্যান্ড পিজা, উত্তরা। প্রিন্স রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড পার্টি সেন্টার, ধানমন্ডি। ডিস অ্যান্ড ডেজার্ট, হেরিটেজ ফিউশান কুজিন, নান্দুস, স্কাই শেফ রেস্টুরেন্ট , কাস্পিয়ান পার্সিয়ান ক্যুজিন, গুলশান। লাসানিয়া কাবানা রেস্টুরেন্ট, কলাবাগান।

Related posts

Leave a Comment