কেন ভূমিকম্প হয়? এবং তা থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?
সারা দেশ কম্পিত হয়ে উঠছে মৃদু কম্পনে , এগুলো বড় একটা কম্পন আসার আগে সতর্ককারী কম্পন। মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সতর্ক করেন যাতে করে তারা অনুতপ্ত হয় এবং আল্লাহর রাস্তাই ফিরে আসে। সকল প্রশংসা আল্লাহর তালার জন্য, এবং শান্তি বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের প্রতি , তাঁর পরিবারের উপর, তাঁর সাহাবাদের উপর এবং তাদের উপর যারা তাদের অনুসরণ করেন।
মহান আল্লাহ সর্বজ্ঞানী, তাঁর ইচ্ছা এবং তিনি যা কিছু পাঠাবেন সে সকল বিষয়ে তিনিই সবকিছু জানেন এবং তিনি সর্বাধিক জ্ঞানী এবং সর্বাধিক অবহিত তাঁর আইন কানুন ও আদেশ সম্পর্কে। মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাহদেরকে সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন প্রকারের নিদর্শন সৃষ্টি করেন এবং বান্দাহর উপর প্রেরণ করেন যাতে করে তারা মহান আল্লাহ কর্তৃক তাদের উপর
অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন ও ভীত হয়। বান্দাহরা মহান আল্লাহর সাথে যা শিরক করে (অর্থাৎ, ইবাদত করার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর সাথে অংশিদারিত্ব করে) এবং তিনি যা করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকার জন্য তিনি এই নিদর্শন সমূহ প্রেরণ করেন যাতে করে তারা তাদের ভুল বুঝতে পারে, তাদের বোধদয় হয় এবং তাদের রবের দিকেই একনিষ্ঠভাবে ইবাদত করে।মহান আল্লাহ বলেন:“(আসলে) আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আযাবের) নিদর্শনসমূহ
পাঠাই” ( সূরা ইসরা ১৭:৫৯) “অচিরেই আমি আমার (কুদরতের) নিদর্শনসমূহ দিগন্ত বলয়ে প্রদর্শন করবো এবং তাদের নিজেদের মধ্যেও (তা আমি দেখিয়ে দিবো), যতোক্ষণ পর্যন্ত
তাদের উপর এটা পরিস্কার হয়ে যায় যে, এই (কুরআনই মূলত) সত্য; একথা
কি যথেষ্ট নয় যে, তোমার মালিক সবকিছু সম্পর্কে অবহিত?” (সূরা হা-মীম আস সিজদা : ৫৩)“বল: আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর, তোমাদের উপর থেকে (আসমান থেকে) অথবা তোমাদের পায়ের নীচ থেকে আযাব পাঠাতে সক্ষম, অথবা তিনি তোমাদের দল-উপদলে বিভক্ত করে একদলকে আরেক দলের শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাতেও সম্পূর্ণরূপে সক্ষম।” (সূরা আল আনআম : ৬৫)আল-বুখারী তার সহীহ বর্ণনায় জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণনা
করেন,তিনি বলেন: যখন “তোমদের উপর থেকে (আসমান থেকে) ” নাযিল হলো তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: “আমি তোমার সম্মূখ হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি”, অথবা যখন, “ অথবা তোমাদের পায়ের নীচ থেকে আযাব পাঠাতে সক্ষম” নাযিল হলো, তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামবললেন: “আমি তোমার সম্মূখ হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি”। (সহীহ আল বুখারী, ৫/১৯৩)(আবূল-শায়খ আল-ইস্পাহানি এই আয়াতের তাফসীরে বর্ণনা করেন,“বল: আল্লাহ তায়ালা তোমাদের উপর, তোমাদের উপর থেকে (আসমান থেকে) ” যার ব্যাখ্যা হলো, তীব্র শব্দ, পাথর অথবা ঝড়ো হাওয়া; “অথবা তোমাদের পায়ের নীচ থেকে আযাব পাঠাতে সক্ষম”, যার ব্যাখ্যা হলো, ভুমিকম্প এবং ভূমি ধ্বসের মাধ্যমে পৃথিবীর অভ্যন্তরে ঢুকে যাওয়া।)
নিঃসন্দেহে বর্তমানে যেসকল ভূমিকম্পগুলো ঘটছে তা মহান আল্লাহর প্রেরিত সতর্ককারী নিদর্শনগুলোর একটি যা দিয়ে তিনি তাঁর বান্দাহদের ভয় দেখিয়ে থাকেন। এই ভূমিকম্প এবং অন্যান্য সকল দূর্যোগগুলো সংগঠিত হওয়ার ফলে
অনেক ক্ষতি হচ্ছে, অনেকে মারা যাচ্ছে এবং আহত হচ্ছে; এই দূর্যোগগুলো
আসার কারণ হচ্ছে, শিরকী কার্যকলাপ(ইবাদতের ক্ষেত্রে অন্য কাউকে মহান আল্লাহর অংশীদার বানানো) এবং মানুষের পাপ (মহান আল্লাহ যে কাজগুলো করতে নিষেধ করেছেন সে কাজগুলো করার কারণে)।এক্ষেত্রে মহান আল্লাহ বলেন:
“(হে মানুষ) যে বিপদ আপদই তোমাদের উপর আসুক না কেন, তা হচ্ছে তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই, এবং (তা সত্ত্বেও) আল্লাহ তাআলা
তোমাদের অনেক (অপরাধ এমনিই) ক্ষমা করে দেন।” (সূরা আশ শূরা : ৩০) “যে কল্যাণই তুমি লাভ কর (না কেন, মনে রেখো), তা আল্লাহর পক্ষ
থেকেই আসে, আর যেটুকু অকল্যাণ তোমার উপর আসে তা আসে তোমার নিজের থেকে”। (সূরা আন নিসা : ৭৯)