আজও নাসিমার দিনটা শুরু হল থাপ্পড় খেয়ে। থাপ্পড় উর্মিই মারল। সকালবেলায় উর্মির ঘরে চা নিয়ে ঢুকেছিল নাসিমা। চায়ে নাকি চিনি কম হয়েছিল তাই । নাসিমাকে উর্মি প্রায় দিনই উঠতে-বসতে চড়-থাপ্পড় মারে। নাসিমা কী আর করবে। চুপচাপ সহ্য করে যায়। ঢাকা শহরে ভাত যে অত সস্তা না, তা নাসিমা জানে। ওর মতো যারা এই শহরে বেঁচে আছে, তারা কিল গুঁতো খেয়েই বেঁচে আছে। নাসিমার ওপর বিরক্ত উর্মি। নাসিমা ভারি অলস। তার ওপর কথা শোনে না। কোনও কাজেরও না। চা-টাও ঠিকমতো বানাতে পারে না। তবে নাসিমার ওপর উর্মির বিরক্ত হওয়ার অন্য একটি…
Read MoreMonth: July 2012
অশরীরী !!!
আজও অনেক রাতে ঘুম ভেঙে গেল মুর্তজার। পাশের ঘরে কারা কথা বলছে। পুরুষ কন্ঠও রয়েছে । মনের ভুল? গতকালও অনেক রাতে ঘুম ভাঙার পর এমনই পুরুষকন্ঠের আওয়াজ শুনেছিল মুর্তজা। বিছানা ছেড়ে উঠে পাশের ঘরে আলো জ্বালিয়ে কাউকে দেখতে পায়নি। বিছানায় মেয়েদের নিয়ে ঘুমিয়ে ছিল রাশেদা । তাহলে কে কথা বলল ? পুরুষ কন্ঠে? আমার মনের ভুল? খানিকটা বিভ্রান্ত বোধ করেছিল মুর্তজা । …এই মুহূর্তে পাশের ঘরে এসে আলো জ্বালায় মুর্তজা । গীতি আর মুন্নীকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে রাশেদা। ঘরে আর কেউ নেই। অথচ স্পষ্ট পুরুষের কন্ঠ শুনতে পেলাম। মনে…
Read Moreলামিয়া !!
পুতুলটা কিনে আনার দিনই টিয়ে পাখিটা মরে গেল। অ্যাকুয়ারিয়াম –এর তিন জোড়া গোল্ডফিশ, দু জোড়া এ্যাঞ্জেল আর এক ঝাঁক ব্ল্যাক মলি মরে উলটো হয়ে ভাসতে লাগল। আর ঘোর জ্বরে পড়ল নাসিমা । এসবই হয়তো কোইন্সিডেন্স। তবু মোর্শেদ কেমন গম্ভীর হয়ে ওঠে। অদিতির ফরসা মুখেও মেঘ জমে উঠল। পুতুলটা অবশ্য ভারি সুন্দর । ছোট্ট, হলদে হলদে হাত-পা, লালচে চুল, বড় বড় চোখ, ঢেউ খেলানো বড় বড় পাঁপড়ি; মনির রং গাঢ় নীল। চোখের দৃষ্টি অবশ্য কেমন যেন শীতল, একটানা তাকিয়ে থাকলে শরীর কেমন হিম হয়ে যায় অদিতির । গুলশান- এর একটা শপিং…
Read Moreফিরোজ !!
২১-০৩-১৯৯৭ ফিরোজকে আমি বিশ্বাস করে ভুল করেছি। ওকে আমি ভুল করে খুব ভাল একজন বন্ধু মনে করেছিলাম। তাই ওকে দিয়েছিলাম আমার ভাইয়ের স্থান। আমার মাকে মা বোন কে বোন ডাকার অধিকার। ছোটবেলা থেকে ওকে আমি নিজের ভাইয়ের মত দেখেছি। কিন্তু আজ আমার কাছে সব পরিষ্কার। ও আমার ভাই নয়- ও আমার বোনার ঈজ্জত হরণ করেছে একা পেয়ে। যে বোন হেসে খেলে কাটাত ওর সময়- সে এখন কবরের ভেতর। আত্মহত্যা ছাড়া হয়ত কোন পথ খুঁজে পায়নি। কদিন আগে সুমি আমাকে বলেছিল- “ভাইয়া ফিরোজ ভাই আমার দিকে কেমন কেমন করে তাকায়- আমার…
Read Moreএক রোমহর্ষক ঘটনা !!!
বছরখানেক আগের ঘটনা।। আমাদেরই এক বন্ধু সিহাব গিয়েছিলো তার গ্রামের বাড়ি শ্রীপুরে।। সেখান থেকে এসে সে আমাদের এক রোমহর্ষক ঘটনা শোনালো।। ঘটনাটা ঐ গ্রামের এক মাঝবয়সী লোককে নিয়ে।। উনার নাম ছিল মন্নান মিয়াঁ।। ছিলো বলছি কারন লোকটা এখন জীবিত নেই।। সে যাই হোক, আমাদের এই ঘটনার মূল অংশ মন্নান মিয়াঁকে নিয়ে।। মন্নান মিয়াঁ শ্রীপুর গ্রামের স্থানীয় কেউ নন।। বছর পাঁচেক আগে গ্রামে এসেছিলেন ঘু…রতে ঘুরতে।। এ…রপর গ্রামের লোকজন তাকে পছন্দ করে ফেলে।। একটা ঘরও তুলে দেয়া হয় তার জন্য।। লোকটা খুবই মিশুক প্রকৃতির ছিল।। কারো যেকোনো সাহায্যে তাকে ডাকলেই সাড়া…
Read Moreশেষ রাতের ট্রেন !!
“এই চা গরম -চা গরম ” – চিকন একটা গলায় চিৎকার করে চলেছে মিশকালো একটা লোক- হাতে এক বিশাল চায়ের ফ্লাক্স- চিল্লাতে চিল্লাতে রাজু সাহেবের সামনে মিনিট তিনেক ধরে ঘুর ঘুর করছে। যত বার রাজু সাহেবের সামনে যাচ্ছে ততবার রাজু সাহেব বিরক্ত হচ্ছেন- কিন্তু চা ওয়ালার কোন ভ্রুক্ষেপ নাই। লাকসামের রেলস্টেশনের ওয়েটিং এ রাজু সাহেব আজ রাত্রের গুটি কয়েক যাত্রির মাঝে একজন। স্যুট বুট পড়া বলে রাজু সাহেবের দিকে বার বার এগিয়ে আসছে একের পর এক হকার। তিনি সবাই কে ফিরিয়ে দিয়েছেন। উনার মা উনাকে ভরপেট খাইয়ে দিয়েছে। আর পই…
Read More।। লাল বৃত্তে বন্দি ।।
বাসায় ঢুকেই নাদিয়ার মা জুলেখা বেগম ভুরু কুঁচকে বললেন, “এ কেমন বাসা ঠিক করেছ? বড্ড ছিমছাম আর নির্জন। তার উপর শহরের এক মাথায়।” নাদিয়ার বাবা ফারুক সাহেব তার স্ত্রীর কথা শুনে হাসলেন। বললেন,“ জানো কত কষ্ট করে এই বাসাটা জোগাড় করেছি। শহরের এক পাশে হলেও বাসাটার অনেক সুবিধা। : কি সুবিধা? : প্রধান সুবিধা হচ্ছে বাড়িওয়ালা এখানে থাকেন না। পুরো বাড়িটায় নিজেদের মতো করে থাকা যাবে। আর সামনে কত খোলা জায়গা। মনে হয় স্বর্গ।” : কিন্তু যদি ডাকাত আসে। আশেপাশে তো তেমন কোন ঘরবাড়ি নেই। আমদের মেরে ফেললেও তো কেউ…
Read More।। একটি ডাক্তারী অভিযান এবং আমার অভিজ্ঞতা ।।
১৯৯৫ সাল। পৌষ মাসের শীতে তখন সবাই বেশ কাবু। তারিখ আর বার আমার ঠিক মনে নেই। আমি তখন চট্রগ্রাম ভার্সিটিতে পড়াশোনা করছিলাম। আমার হবি ছিল ছুটি পেলেই কোনও না কোনও আত্মীয়ের বাসা থেকে বেরিয়ে আসা। যাই হোক, তেমনি এক ছুটিতে আমার এক কাজিনের বাসায় বেড়াতে গেলাম। তিনি থাকেন বান্দরবানে বাজার টাইপের একটা ছোটখাট এলাকায়। তিনি ঐ এলাকার একজন নামকরা ডাক্তার। দি…ন বা রাত যেক…োনো সময়ই উনার ডাক পড়ত। সেদিন রাতে খাওয়াদাওয়ার পর রুমে এসে বেশ আরাম করে বসে একটা সিগারেট ধরালাম। ২ টান না দিতেই কে যেনও দরজায় নক করল।…
Read Moreআতঙ্ক !!
জুলাই মাস। আমার তখন মাত্র বিয়ে হয়েছে। আমি চিটাগাং এ থাকতাম, আমার হাজব্যান্ড ইউ, এস থেকে এসছিলেন, তাই যতদিন থাকবে তার বোনের বাসায় থাকার ব্যাবস্থা করা হল। আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে পরদিন দুপুরে সব বরযাত্রী সহ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ঢাকা এসে পৌছলাম রাত প্রায় ১ টা। ছোট আপার (আমার ছোট ননাস) ফ্ল্যাট বড় মগবাজারে বেশ পুরোনো একটা বিল্ডিং এর চার তলায়। প্রায় দশ বছর ধরে এই বিল্ডীং এই আছেন তারা। চটচটে গরমের একটা রাত, সারাদিন এর জার্নির পর আমি পৌছেই অস্থির হয়ে গেলাম গোসলে যাওয়ার জন্য। পুরোনো হলেও…
Read Moreজানাজা !!
রমিজ মিয়া লাশটাকে দেখে যত ভয় পেলো তা মনে হয় সারাজীবনে সে কোনদিন পায় নাই।এইটাই তার পেশা,কবর খুলে লাশ নামানো।বেশিরভাগ বেওয়ারিশ লাশ এইখানে কবর দেওয়া হয়। রমিজ মিয়ার এইসব লাশ কবরে রাখতে খুব মায়া হয়। লোকটা পৃথিবীতে এতদিন কত আমোদেই কাটাইলো আর এহন মারা যাওনের পর তার লাশডাও কেউ খুজতে আইলো না।এই লোকের ভাগ্যে হয়ত এইটাই লেখা ছিলো। এসবই ভাবে রমিজ মিয়া লাশগুলারে মাটি দেয়ার সময়। কিন্তু এই লাশটা…র ক্ষেত্রে তার এমন কোন অনূভুতি কাজ করলো না।বরং ভয় পেয়েছে সে।লোকটার মুখ দেখে বয়স আন্দাজ করেছে রমিজ মিয়া,প্রায় ৫০ হবে। কিন্তু…
Read More