বাংলাদেশে এমএলএম কোম্পানির ইতিহাস
১৯৯০ সাল থেকে নগদ অর্থ দিয়ে সদস্য হয়ে আবার অন্যকে সদস্য করার মাধ্যমে প্রাপ্ত কমিশন থেকে নিজের মূলধন তুলে নিয়ে পরবর্তী দীর্ঘ ধাপগুলোতে রীতিমতো কোটিপতি বনে যাওয়ার স¦প্ন দেখিয়ে দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠে নগদ অর্থকে দ্রব্যের হিসেবে পিরামিড পদ্ধতির উদ্ভট এক মাল্টি লেভেল মার্কেটিং ব্যবসা। এর পর সরকার জনগণের স¦ার্থ রক্ষার্থে ও পরস্পর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ লাঘবে নগদ অর্থ দিয়ে এমএলএম পদ্ধতির ব্যবসা বন্ধ করে দেয়। ওই সময়ের ধূর্ত এমএলএম ব্যবসায়ীরা ভোল পাল্টে নগদ অর্থের স্থলে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত নিম্নমানের দ্রব্য, গাছ বিক্রয়, জমি বাড়ি বিক্রির মাধ্যমে কোম্পানির সদস্য করা প্রভৃতি পদ্ধতি ব্যবহার করে। মূলত ওই একই পদ্ধতি ব্যবহার করে একই রকমভাবে বর্তমানে এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। শুধু নগদ অর্থের বদলে গাছ বা নিম্নমানের দ্রব্যের নাম বলা হয়। বিক্রীত দ্রব্য কোনো কাজে লাগুক বা না লাগুক, ক্রেতার ক্রয়কৃত গাছ আগামী ১০/২০ বছরে চোখে দেখা যাক বা না যাক লেনদেন হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা।

বিরুদ্ধে অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার জন্য কোম্পানিগুলো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ব্যবসার অংশীদার করেছে, চাকরি দিয়েছে বা বড় বড় ক্রীড়া অনুষ্ঠান বা কালচারাল ইভেন্ট স্পন্সর করেছে। জনসাধারণের কাছ থেকে প্রাপ্ত আমানত দিয়ে দেশ-বিদেশে কোম্পানির গুটিকতক ব্যক্তির নামে সম্পদ করা হয়েছে। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। আবার জনসাধারণ যখন তাদের আমানত ফেরত আনতে গেছে তখন কোম্পানিগুলো কিছুদিন পর অফিস বন্ধ করে গায়েব হয়ে গেছে।
অন্যদিকে ওয়েবপেজনির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্লিক ডটকম, সেল বাজার ডটকম প্রভৃতির মতো ইন্টারনেট ভিত্তিক ডাইরেক্ট সেলিং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ডোর টু ডোর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেমনÑ মার্কেট অ্যাকসেস, মার্কেট রিসার্চ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) পদ্ধতির অন্তর্গত ডাইরেক্ট সেলিং ব্যবসা (ডোর টু ডোর, অর্ডার অ্যান্ড সাপ্লাই) পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো ধরনের প্রতারণা ছাড়াই দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে এদেশে ব্যবসা পরিচালনা করছে। মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) পদ্ধতির নিজস¦ কোনো অপরাধ নেই। ব্যক্তিবিশেষে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) পদ্ধতির অন্তর্গত প্রতারণামূলক পদ্ধতি, বিভিন্ন নামে প্রকৃত অর্থে বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ পিরামিড পদ্ধতির ব্যবসা পরিচালনা করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করছে।